দুর্গাপুজোর সময় আদালতের দেওয়া গাইডলাইন মেনেই এবার মা জগদ্ধাত্রীর আরাধনা হবে চন্দননগরে। সেখানেও জগদ্ধাত্রী পুজোয় দর্শনার্থীদের মণ্ডপে প্রবেশ নিষিদ্ধ। মণ্ডপের দশ মিটার আগেই ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হবে দর্শনার্থীদের। বুধবার চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির বৈঠকে তেমনই সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে ঠিক হয়েছে, এবছর রাজ্য সরকারের সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দেশাবলি এবং কলকাতা হাই কোর্টের দুর্গাপুজো সম্পর্কীয় গাইডলাইন তথা নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করা যেতে পারে।
আগের মতোই স্বাভাবিক উচ্চতা সম্পন্ন প্রতিমাই কি হবে এবার ফরাসডাঙ্গায়, নাকি ঘটপুজো করেই ভিড় হওয়া থেকে শহরকে বাঁচাবেন পুজো উদ্যোক্তারা। দুর্গাপুজো কাটতেই সেই বিতর্ক শুরু হয়েছিল চন্দননগরে। দুর্গাপুজো নিয়ে আদালতের নির্দেশের পর তা আরও বাড়ে। আর এদিন পুলিশ এবং চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি জানিয়ে দেয়, রাজ্য সরকার এবং আদালতের নির্দেশ ও গাইডলাইন মেনেই পুজো হবে। কিছু বারোয়ারি বলছিল মূর্তি পুজো হলেই দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়বে। তাই ঘটপুজো ছাড়া গতি নেই। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চন্দননগরের একাধিক গ্রুপে শুরু হয়েছে যুক্তি পালটা যুক্তির পর্ব। চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পূজা কমিটি এর আগেই বৈঠক করে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, যারা চান তারা মূর্তিপুজো করতে পারেন। তবে জগদ্ধাত্রী প্রতিমার স্বাভাবিক উচ্চতা মেনে তা করতে হবে। যে সমস্ত বারোয়ারি করতে রাজি নয় তারা ঘটপুজো করতে পারে। কিন্তু ছোট ঠাকুর কোনওভাবেই করা যাবে না। ইতিমধ্যেই দুর্গাপুজোর দশমীর দিন নিয়ম মেনে কাঠামো পুজো হয়েছে সব বারোয়ারিতে। চন্দননগরবাসীর অবশ্য আশা, ১০ ফুট দূরে দর্শনার্থী আটকালেও প্রতিমা তারা দেখতে পাবেন। কারণ এখানকার মা’য়ের উচ্চতা অনেক বড়। অনেক দূর থেকেই দেখা যাবে চারদিক খোলা মণ্ডপ হলে। সে ক্ষেত্রে প্রতিমা দেখতে কোনও সমস্যা হবে না।
করোনা আবহে দুর্গাপুজো হলেও আদালতের নির্দেশে দর্শনার্থীদের মণ্ডপে প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। আদালতের নির্দেশ বেশিরভাগ পুজো কমিটিই মেনেছে। তবে প্রত্যেক পুজো কমিটির কর্তাদের গলাতেই ছিল আক্ষেপের সুর। যদি এই রায় আগে দেওয়া হত তবে হয়তো মণ্ডপ বা প্রতিমার পিছনে লাখ লাখ টাকা খরচ তাঁরা করতেন না। তাই কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল। তারা জানিয়েছে, চন্দননগরের ঐতিহ্যের সঙ্গে তাল রেখে বারোয়ারির স্থায়ী কাঠামোয় মাতৃ প্রতিমা নির্মাণের মাধ্যমে পুজো করতে হবে। তবে স্বাভাবিক উচ্চতা সম্পন্ন পূজা আয়োজনে অনিচ্ছুকরা, স্থায়ী কাঠামোয় জগদ্ধাত্রী মাতার প্রতিচ্ছবি ফ্লেক্স স্থাপন করেও প্রতিমা বিহীন ঘটপূজার আয়োজন করতে পারবেন।
কেমনভাবে পুজো করতে আগ্রহী তা জানতে চেয়ে কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি এ বিষয়ে সমস্ত বারোয়ারির কাছে মতামত চায়। সেখানে ১১৯টি পূজা কমিটি চিরাচরিত স্বাভাবিক উচ্চতা সম্পন্ন প্রতিমা নির্মাণের মাধ্যমে পুজো করার মত দেয় এবং ৩৩টি পুজো কমিটি ঘটপূজার পক্ষে মতামত দেয়। চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ সাউ বলেন, “দুর্গাপুজোর ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার ও আদালত যে গাইডলাইন দিয়েছে তা মেনেই এখানে জগদ্ধাত্রী পুজো হবে। প্রত্যেক মণ্ডপের ১০ মিটার আগেই ব্যারিকেড করে দেওয়া থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকরাও থাকবেন গোটা বিষয়টা সামলাতে।”
Report by rahul gupto
Reported on – 29-October-2020
More Stories
জমজমাট সমকালীন সংস্কৃতির মোহনামুখী নাট্যউৎসব
বড়দিনে সেজে উঠল এলগিন রোড
নন্দনে চলছে ৪র্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব