আয়ুষের বাবা নারায়ণ নন্দী কর্মসূত্রে শিল্প নির্দেশনার সঙ্গে যুক্ত। সেই সূত্রে বাড়িতে শিল্পকলার কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী থাকতই। আর আয়ুষের মন পড়ে থাকত বাবার কাজের ঘরের দিকে। ছোটবেলা থেকেই মাটির ছোট মূর্তি, কাগজের টুকরো জুড়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করত সে। সেসব দেখে নারায়ণবাবুও ছেলেকে উৎসাহ দিতেন। মাসখানেক আগে আয়ুষ বাবার কাছে বায়না ধরে তাকে শিফন সুতো, হ্যান্ড মেড পেপার, কিছু স্টোন ও খবরের কাগজ এনে দিতে হবে। জিজ্ঞাসা করলে বলে সে একটি দুর্গা ঠাকুর বানাবে। নারায়ণবাবু সে সব এনে হাজির করতেই কাজে লেগে পড়ে আয়ুষ। ঠাকুরের চালচিত্র তৈরির জন্য পাশের বাড়ির কাকুর নতুন কেনা ফ্রিজের বোর্ডগুলি চেয়ে নেয়। আর দিন কয়েকের মধ্যেই সেসব দিয়ে সে বানিয়ে ফেলে অপরূপ একটি দুর্গা প্রতিমা। ছেলের বানানো সেই দুর্গা প্রতিমা দেখে মোহিত হয়ে যান নারায়ণবাবু। এরপর ওই দুর্গা প্রতিমার একটি ভিডিও তিনি ফেসবুকে দেন। যে ভিডিওটির শেষে আয়ুষকে বলতে দেখা যায়, “আমার এই দুর্গা ঠাকুরটি যদি কেউ দেখতে আসে খুব ভাল লাগবে।”

সম্প্রতি আয়ুষের ওই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখতে পান রাজপুর কালীতলার বাসিন্দা তমাল পাহাড়ি। “আমার এই দুর্গা ঠাকুরটি যদি কেউ দেখতে আসে আমার খুব ভাল লাগবে”, ভিডিওয় আয়ুষের বলা এই কথাই যেন বিদ্যুতের ঝিলিক লাগায় তাঁর শরীরে। সত্যিই কেউ কী স্বাদ পাবে না আয়ুশের সৃষ্টির, সেই প্রশ্নই মাথাচাড়া দেয় তমালবাবুর মনেও। তিনিই উদ্যোগ নেন। স্থির করেন আমজাদ হাবিব ব্র্যান্ডের ফ্রাঞ্চাইজি নেওয়া স্যালনে রাখা থাকবে খুদের সৃষ্টি। আয়ুষের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনিও প্রায় এক বাক্যেই রাজি হয়ে যান। ব্যস! যেমন ভাবনা তেমন কাজ। রবিবারই খুদের সৃষ্টিকে সমাদরে নিজের স্যালনে স্থান দেন তমালবাবু।

গুণীকে স্বীকৃতি দিতেও ভোলেননি তিনি। ধুতি, পাঞ্জাবি আর সঙ্গে শঙ্কু সমগ্র উপহার দেন আয়ুষকে। বাঙালি এমন ভাল দিনে মিষ্টিমুখ করবে না, তা তো হতেই পারে না। তাই মিষ্টিমুখেরও আয়োজন করেন। সঙ্গে আয়ুষকে দেওয়া হয়েছে একটি শংসাপত্র। যা আগামী দিনে চলার পথে আয়ুষকে অনুপ্রেরণা জোগাবে। ছোট্ট হাতের ছোঁয়ায় তৈরি দুর্গা প্রতিমার সমাদরে বেজায় খুশি তার বাবা-মা।
আয়ুষের তৈরি হাতের প্রতিমা দেখতে চাইলে আপনাকে বেলঘরিয়ায় ওই স্যালনে ঢুঁ মারতেই হবে। তবে উপযুক্ত কোভিডবিধি মেনে বাইরে বেরতে ভুলবেন না।
Report by – রাহুল গুপ্ত
Reported on – 12th October 2020
More Stories
জমজমাট সমকালীন সংস্কৃতির মোহনামুখী নাট্যউৎসব
বড়দিনে সেজে উঠল এলগিন রোড
নন্দনে চলছে ৪র্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব