রাহুল গুপ্ত , কলকাতা ::
অতিমারী করোনা কাঁটায় রাজ্যস্তরীয় খাদি মেলা হবে কি হবে না – এই নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিলো আলোচনা। অবশেষে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় প্রতিবারের মতো এইবার ও শুরু হলো রাজ্যস্তরীয় খাদি মেলা ২০২১। হয়তো কিছুটা দেরিতে , কিন্তু তাতে কি ?? ২০১৫-১৬ থেকে শুরু হওয়া এই খাদি মেলা বাংলার খাদি কে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে তা বলাই বাহুল্য। খাদির পোশাকের চাহিদা থেকে তার গুণগত ম্যান বৃদ্ধি সবেতেই রয়েছে রাজ্যস্তরীয় খাদি মেলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
২২ শে জানুয়ারী , বিকেল ঠিক ৪ টে – সাউথ সিটি মল সংলগ্ন তালতলা মাঠে শুরু হলো ২০২১ রাজ্যস্তরীয় খাদি মেলা। উপস্থিত থাকলেন প্রধান অতিথি হিসাবে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী ও রাসবিহারী কেন্দ্রের বিধায়ক শ্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় , মন্ত্রী শ্রী স্বপন দেবনাথ , বোর্ড অফ এডমিনিস্ট্রেটর -KMC শ্রী রতন দে , বোর্ড অফ এডমিনিস্ট্রেটর -KMC শ্রী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। উপস্থিত থাকলেন পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদ সভাপতি এবং বিধায়ক শ্রী গৌরীশঙ্কর দত্ত। উপস্থিত থাকলেন পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের কার্যনির্বাহী প্রধান আধিকারিক শ্রী মৃতুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিবারের মতো খাদি মেলার মঞ্চে সঞ্চালকের ভূমিকায় থাকলেন স্বয়ং পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন আধিকারিক শ্রী বিশ্বজিৎ সরকার। সবার উপস্থিতিতে মঞ্চ আলোকিত করে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন এর মধ্যে দিয়ে পথচলা শুরু হলো ২০২১ রাজ্য স্তরীয় খাদি মেলার।
এইবার মেলায় মোট ৩৪ টি খাদি স্টল , ৪১ টি গ্রামীণ শিল্পের স্টল থাকছে। এই মেলায় আধুনিক পোশাক যেমন – সুতি , রেশম , তসর , গরদ , কোটিয়া , ও মসলিন এবং গ্রামীণ শিল্পের সামগ্রী যেমন – কাঠের পুতুল , দরিয়াপুরের ডোকরা , কাঁথা শিল্প , মেদিনীপুরের মাদুর , কোচবিহারের শীতল পাটি ইত্যাদি পাওয়া যাবে। উল্লেখ্য ২০১৫-১৬ সালে শুরু হওয়া এই মেলার মোট বিক্রয়ের পরিমান ছিল ১.০২ কোটি টাকা , ২০১৯-২০ সালে সেই বিক্রয়ের পরিমান বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৭.৫০ কোটি টাকা এবং Buyer -Seller Meet আয়োজনের পরে পাইকারী বিক্রয় ২০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সবাই আশা রাখছেন যে চলতি খাদি মেলায় সেই বিক্রয়ের পরিমান ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ৩৫০ টি সমিতির মোট বিক্রয়ের পরিমান প্রায় ২৩৫ কোটি টাকা।
মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বললেন খাদি বাংলার গৌরব , সুতরাং খাদি মেলা হওয়ার প্রয়োজনীয়তা ছিল বৈকি। রাজ্যের অপর মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানালেন এই মেলার ফলে বাংলার অর্থনৈতিক কাঠামো আরও দৃঢ় হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদ সভাপতি এবং বিধায়ক শ্রী গৌরীশঙ্কর দত্ত বললেন যে তিনি আশাবাদী এইবার আরও বৃদ্ধি পাবে খাদির পোশাক কিংবা গ্রামীণ দ্রব্যের চাহিদা। পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের কার্যনির্বাহী প্রধান আধিকারিক শ্রী মৃতুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় আবেদন করলেন আসুন সবাই প্রতিবারের মতো এইবার ও মেলায় উপস্থিত থেকে খাদি পোশাক ক্রয় করি।
সব মিলিয়ে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্ম দিবসের আগের দিন শুরু হয়ে গেলো ২০২১ রাজ্য স্তরীয় খাদি মেলা। মেলা চলবে ৮ ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। শনি – রবিবার ও প্রতি ছুটির দিন থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তবে প্রতিবারের মতো নয়। অতিমারী করোনা কাঁটায় এইবার ছোটো আকারে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সুস্থ থাকুন – ভালো থাকুন – খাদি মেলায় এসে খাদির পোশাক এবং গ্রামীণ দ্রব্য কিনে খাদিকে বাঁচান এই অঙ্গীকার – শপথ নিয়ে ২০২১ খাদি মেলার পথ চলা শুরু হয়ে গেলো।
Report by রাহুল গুপ্ত , কলকাতা
Reported on – 23/01/2021
More Stories
আসুন বেহালায় ,দর্শন করুন মা বৈষ্ণদেবীর মন্দির
শেষ হল রাজ্য খাদি মেলা , মেলায় বিক্রি প্রায় ৬ কোটি
খাদি মেলার শেষ রবিবারে জমজমাট ভীড় , আজ শেষ দিন